
নাজমুল হাসান নিরব,ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে প্রেসক্লাব চত্তরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলা করার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ককটেল নিক্ষেপ আর মঞ্চ ভাংচুর করায় সমাবেশ পন্ড হয়ে গেছে।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে ‘পুলিশের মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা, পুলিশী নির্যাতন ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে’এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ফরিদপুর মহানগর শাখা। এতে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ এফ এম কাইউম জঙ্গী।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,সমাবেশ উপলক্ষে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্তরে ছোট আকারের একটি মঞ্চ করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তখনও ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেননি। ওই সময় মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে বসা ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ও সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানায় বিকেল পৌনে চারটার দিকে হেলমেট ও মুখে মাক্স পড়া অনুমানিক ৩০/৩৫ জন তরুণ লাঠি ও ইট নিয়ে সভাস্থলে হামলা করে। হামলাকারীরা ব্যানার ছিনেয়ে নেয়, চেয়ার ভাংচুর করে। এ সময় হামলাকারীরা তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
এসময় পুলিশ সিজান নামে ছাত্রদলের এক কর্মীকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। এ আটককে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাদের ধ্বস্তাধস্তি হয়।
পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ঘটনাস্থলে আসেন।
ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন বলেন, এখানে আজ আমাদের যে সমাবেশ ছিল সেটা ছিল সাধারণ মানুষের উপরে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপরে সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে, ১১ জন নেতা মারা গেছে তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ ছোট সমাবেশ করতে এসে আমরা হামলার শিকার হলাম।
শামা ওবায়েদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, পুলিশের গুলিতে এ পর্যন্ত বিএনপির ১১ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে। তার প্রতিবাদে গত চারদিন আগে আমরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছি। পুলিশের তত্তাবধানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এ হামলা করেছে। আমরা দেখেছি তারা বিভিন্ন জায়গায় ককটেল রেখে গায়েবী মামলা দিচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ তারা ফরিদপুরে প্রেসক্লাবে ককটেল ফাটিয়ে আমাদের লোকদের ধরপাকড় করেছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন বলেন, হামলায় দিলিপসহ তাদের অন্তত ৮ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ রিতু, কামাল, রাজীব ও সিজানসহ বেশ কয়েকজন তরুণ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ফরিদপুর বিএনপি শামা ওবায়েদ ও নায়াব ইউসুফ এই দুই ভাগে বিভক্ত। তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ থেকে সভাস্থলে হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। তিনি বলেন, হামলা ঠেকানে গিয়ে পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশ ১১টি সর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।