
নাজমুল হাসান নিরব, ফরিদপুর :
আগামী ১৭ ই অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তরফ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা অমান্যকারীদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে দলীয়ভাবে।
জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে বুধবার (১২ই অক্টোবর) রাতে তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন। এর আগে ১১ই অক্টোবর ঢাকা থেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুব্রত পাল যুবলীগকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন। এরপরে যুবলীগ তাদের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য বলেন। এদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ফারুক হোসেনের পক্ষে প্রতিটি উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সক্রিয় রয়েছেন।
যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বারবার আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থী ফারুক হোসেন এর বিপক্ষে কাজ করার ইঙ্গিত এর কথা উঠে আসে। যা নিয়ে জেলা জুড়ে অসন্তোষ তৈরি হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তরফ থেকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, মো. ফারুক হোসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে খুবই যোগ্য প্রার্থী। তিনি দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের এক বীরের নাম ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগে। তিনি এরশাদ বিরোধী আন্দোলন সহ বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ফরিদপুর আওয়ামী লীগে। তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন দলের জন্য। এমন একজন ব্যক্তিকে ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দেওয়াতে আমরা দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। তারা এ সময় ফারুক হোসেনের জন্য প্রতিটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর অনেক কিছু করার রয়েছে বলেও জানান।
নির্বাচন নিয়ে ফারুক হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। ছাত্রলীগ করেছি, যুবলীগ করেছি, দলীয় প্রধান জননেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করেছেন। আমি বিশ্বাস করি যেভাবে দলীয় কর্মীদের পাশে থেকেছি ,আজ এই নির্বাচনে দলীয় কর্মীরা ঠিক তেমনি ভাবে আমার পাশে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন ভোটাররা। তিনি বলেন, আমি প্রতিটি জায়গায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি সবার মাঝে। আমি আশা করছি নির্বাচনে আমি বিজয়ী হব। বিজয় হতে পারলে ফরিদপুর জেলা পরিষদকে অনন্য মডেল হিসেবে তুলে ধরব সারা বাংলাদেশে।
এদিকে ফরিদপুর জেলা পরিষদের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন এর পক্ষে ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর থেকে ব্যাপক প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তার সমর্থক ও নেতা কর্মীরা। তারা জেলার বিভিন্ন জায়গায় থাকা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন তাদের প্রার্থীর জন্য। এর আগে তিনি বাংলাদেশ যুবলীগের কোষাধ্যক্ষের পদটি থেকে ইস্তফা নেন।
নির্বাচন নিয়ে শাহাদাত বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিগত বছরগুলোতে ভোট হয় না। নির্বাচিত চেয়ারম্যান–মেম্বারদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং নিশ্চিত করতে প্রার্থী হয়েছি। তিনি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলেও জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, সংরক্ষিত সদস্যপদে ১১জন ও সাধারণ সদস্যপদে ৩৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ১৭ অক্টোবর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ফরিদপুরের ৯ উপজেলার ৯টি কেন্দ্রে ১ হাজার ১৮১ জন ভোটার জেলা পরিষদ নির্বাচনের অংশ নেওয়া চেয়ারম্যান ও সদস্যপদের প্রার্থীদের ভোট দেবেন।